খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাগত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কর্মশালার চতুর্থ দিন অতিবাহিত
#জীবনের প্রতিটি স্তরে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সাফল্যের সাথে এগিয়ে নেয় : উপাচার্য
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে প্রথম বর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক কাউন্সেলিং এন্ড মোটিভেশন শীর্ষক কর্মশালার চতুর্থ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আজ ০৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সকাল ৯.১৫ মিনিটে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত এ কর্মশালার চতুর্থ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, জীবনের প্রতিটি স্তরে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সাফল্যের পথে এগিয়ে নেয়। শিক্ষার্থীদের সবসময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সামনে এগোতে হবে। দেশ ও জাতির সেবার মানসিকতা থাকতে হবে। জীবনে হতাশ হলে চলবে না। চেষ্টা ও ধৈর্য্যরে সাথে সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র রাজনীতি না থাকায় এ বিশ্ববিদ্যালয় সকলের কাছে পছন্দীয়। তবে এখানকার যে সমস্ত ক্লাব বা সংগঠন রয়েছে তাতে যুক্ত হয়ে নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ রয়েছে। নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বদানের সক্ষমতা সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র শিক্ষাদানের জায়গা নয়, এখানে শিক্ষার্থীদের গবেষণা কার্যক্রমে অংশগ্রহণেও উৎসাহিত করা হয়।
উপাচার্য বলেন, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে শিক্ষাগ্রহণই শেষ কথা নয়। শিক্ষাগ্রহণের পর সমাজের প্রতি কাজ করা আগ্রহ, মন, মানসিকতা থাকতে হবে। যাদের কারণে আজকের এই স্বাধীন দেশ পেয়েছি, সে সমস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সমাজ ও দেশের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, একজন আদর্শিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে যা যা প্রয়োজন, সবই রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানকার পরিবেশ অন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গবেষণায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করেছেন। শিক্ষকদের অধিকাংশই পিএইচডিধারী। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষকদের সাথে গবেষণায়ও অংশগ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে বদ্ধপরিকর। প্রতিবছর সব ডিসিপ্লিনের দুইজন করে শিক্ষার্থীকে গবেষণা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরাও গবেষণায় আগ্রহী হয়ে উঠছে।
উপাচার্য নবাগত শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটেস অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান। একই সাথে এমন একটি কর্মশালা আয়োজনের জন্য তিনি আইকিউএসির পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথাগতভাবে নবাগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। উক্ত শপথবাক্যে র্যাগিং ও মাদককে না বলার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পরে তিনি রিসোর্স পারসন হিসেবে ‘কী টু সাকসেস ইন হায়ার এডুকেশন’ শীর্ষক একটি সেশন উপস্থাপন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাসিফ আহসান, আইন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. ওয়ালিউল হাসানাত ও চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ। সভাপতিত্ব করেন আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. জগদীশ চন্দ্র জোয়ারদার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইকিউএসির উপ-রেজিস্ট্রার মো. নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। এসময় সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালার চতুর্থ দিনে সামাজিক বিজ্ঞান স্কুল, আইন স্কুল এবং চারুকলা স্কুলের আওতাধীন ৬টি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও কর্মশালায় ‘টিচিং লার্নিং অ্যাপ্রোচেস ইন হায়ার এডুকেশন’, ‘এডুকেশন সিস্টেম, রুলস এন্ড রেগুলেশন্স’, ‘এক্সেস টু রিসোর্স, ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি ইন কেইউ’ এবং ‘স্টুডেন্ট সাপোর্ট সার্ভিসেস ইন কেইউ’ শীর্ষক ৪টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।